Welcome to my blog

সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১৮

কোটা সংস্কার আন্দোলনে লাঞ্ছিত ছাত্রী

‘আমার সঙ্গে যা হয়েছে আমি ভাষায় বলতে পারবো না’



কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। হামলাকারীরা ওই দিন যে অশোভন আচরণ ও বাক্য ব্যবহার করেছিল তা আমি ভাষায় বলতে পারবো না। জানালেন তেজগাঁও কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী মরিয়ম মান্নান ফারাহ।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

গত ২ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সমাবেশে এসেছিলেন তেজগাঁও কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মরিয়ম। ওই দিন তার ওপর হামলা করে কোটা আন্দোলন বিরোধীরা। ওই ছবি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

মরিয়ম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনার জানতে চান ওই দিন তারা আমার কোথায় কোথায় হাত দিয়েছিল? কি বলে ছিল?আপনাদের শুনতে ইচ্ছে করতেছে, আমাকে কোথায় কোথায় ধরছে? আমাকে কীভাবে কী করছে? সবাই আমাকে ফোন দিচ্ছে, তোমাকে কী করছে! এখন আমি লাইভে যাব? লাইভে যেয়ে বলব, আমাকে কী করছে? কেমন করে ধরছে? আমি কান্না করব আর সবাই আমাকে সিম্প্যাথি (সহানুভূতি) দেখাবে?'
তিনি বলেন, 'সিম্প্যাথি দেখানোর মেয়ে আমি না। আমি একটি যৌক্তিক আন্দোলনে আসছি। একজন মানুষ হিসেবে আমার কিছু অধিকার আছে। এখানে আসার অধিকার আমার আছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের ওপর বিরোধীদের হামলার সময় তিনি এগিয়ে যান মার খাওয়া মানুষগুলোকে বাঁচানোর জন্যে। উল্টো তিনি হন লাঞ্ছনার শিকার। কীভাবে তাকে অপমানিত করা হয়েছিল। জানান, কীভাবে প্রথমে তাকে লাঞ্ছিত করেছিল হামলাকারীরা, পরে পুলিশ সদস্যরা।
তিনি বলেন, ‘যখন দেখি ফারুক ভাইকে মারছে তখন আমি ভিড়ের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম তাকে রক্ষা করার জন্য। যাওয়ার পর যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তা ভিডিওচিত্রে আপনারা দেখছেন। তার পুরোটা ভাষায় বলা সম্ভব না।’

সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে মরিয়ম বলেন, ‘ওরা (লাঞ্ছনাকারীরা) যখন বলেছিল থানায় নিয়ে চল, মনে হয়েছে যে থানায় নিয়ে গেলে আমি সেফ। কিন্তু, মনে হলো থানা আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম।’
মরিয়ম বলেন, ‘আমি সিএনজিতে উঠেছিলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। সেই সিএনজিটা ঘিরে ধরেছিল অন্তত ২০০ মোটরসাইকেল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারা আমার ফোন-ব্যাগ নিয়ে যায়।’ আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। (আমাকে) ধাক্কাচ্ছে।
লাঞ্চনার শিকার এই শিক্ষার্থী বলেন,  তারা সিএনজির ভেতরেও ঢুকছে। তারপরে কী করছে, এগুলোও বলবো? কীভাবে কীভাবে আমাকে টাচ করছে? আমাকে বলছে, আমি বেশ্যা। এরপরে আমাকে নিয়ে গেল শাহবাগ থানায়।
মরিয়ম বলেন, তখন মনে হয়েছে থানা আমার জন্য সেফ। কিন্তু থানায় যেয়ে মনে হল থানা আমার জন্য এটি সেকেন্ড জাহান্নাম। কিন্তু তারা (পুলিশ) যে আচরণ করেছে তা ভয়াবহ।
তিনি বলেন, তার ব্যাগে ছিল একটি পানির বোতল ও দুইটা মেকআপ বাক্স। অথচ পুলিশ আমার ব্যাগ থেকে বের করলো একটা ছুরি’ বলেন লাঞ্ছনার শিকার ওই শিক্ষার্থী।
মরিয়ম গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, 'অনেকখন ধরে একটা মেয়ে কনস্টবল আমার পাশে বসা। সে আমাকে বারবার ওই ছবিটা দেখানোর চেষ্টা করতেছে। আজকে আমি তাদেরকে (আন্দোলনকারীদের) বাঁচাতে গিয়েছি বলে আমার এই অপরাধগুলো হইছে? তারা আমাকে স্বীকার করাচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক গোপন খবর আমি জানি। তাদেরকে তা দিতে হবে! না হলে ফারুককে কেউ বাঁচাতে গেল না, আমি কেন গেলাম? একটা কুকুরকে এভাবে মারলেও তো মানুষ যায়, সেখানে একটা মানুষকে মারছে, আমি যাব না?'
তিনি বলেন, তারা বলল, আমি ইয়াবা খাই। আমাকে জোর করতেছে বলতে যে, আমি ইয়াবা খাই। আমি নেশা করি। আমি বললাম, আমার ব্যাগটা তারা নিয়ে গিয়েছিল। আমার ব্যাগে কিচ্ছু ছিল না, ছিল ওয়াটার পট আর দুটো মেকাপ। মানসিকভাবে টর্চার তো করেই যাচ্ছে, স্বীকার করানোর জন্য যে, আমি নেশা করি আর ওই জিনিসগুলো আমার।
মরিয়ম বলেন, 'আমাকে আর ছাড়ছে না , রাত ১১টা বাজে, ১২টা বাজে। রাত ১টার দিকে আমার বাসা থেকে লোক আসলো। আসার পরে বলল, এত রাতে একটা মেয়ে, ওকে ছেড়ে দেন। আমার দুলাভাই আবার পুলিশে চাকরি করে। সে ফোন দিয়েছিল। আমার সামনে তাকে বললো, আপনার শালী তো একটা বেয়াদব। আপনি পুলিশে চাকরি করেন বলে ছেড়ে দিলাম। ফোনটা রাখার পরে বলল, দুলাভাই যদি পুলিশ না হত। আজকে বেশ্যা বলে কোর্টে চালান করে দিতাম।

Source: rtvonline.com

Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Most Recent

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

লেবেল

HSC ICT Book

SSC ICT Book

Definition List